
"ঠাকুর কতলোক যে আত্ম-স্বীকৃতি জানিয়ে আমাকে কত পত্র দিয়েছে তার সীমা নেই। তাঁদের কথাই আমি লিখেছি আমার উপন্যাসে"...।
ঠাকুর বললেন - "আমার কাছেও কত লোক যে Confession করেছে এবং তা যে কী বীভৎস তা কাউকে জানাবার উপায় নেই কারন, তারা বলেছে একথা যেন গোপন থাকে।"
....."সমাজ পচে গিয়েছে সত্য কিন্তু তাই বলে অমরা যদি দুঃখের চিত্র, হতাশার ছবি, বিকৃত মনস্তত্ত্বের অভিব্যক্তি লোকের সামনে তুলে ধরি তবে কারও কোন উপকারই আমরা করতে পারিনা। সাহিত্যিকের দায়িত্ব গঠনমূলক চিত্র তুলে ধরা, যার ফলে তারা হতাশার মধ্যে আশা ও দুঃখের মধ্যেও পায় শান্তির ঈঙ্গিত। বাস্তববাদের সঙ্গে যদি আদর্শবাদের সমন্বয় না থাকে তবে কোন সুফলই হবেনা। আদর্শ চরিত্র রূপায়ন করলে তা থেকে মানুষ পাবে উদ্দীপনা - বাস্তব অসুবিধা এবং ভাগ্য বিপর্যয়কে প্রতিহত করে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে। সাহিত্যিক যদি পাঠকের মনে ভরসার সৃষ্টি করতে না পারে, কল্যাণের ঈঙ্গিত দিতে না পারে তবে সে সাহিত্যের মূল্য কতটুকু?" ঠাকুরের প্রেমল কন্ঠের প্রজ্ঞাদীপ্ত কথাগুলি অবাক বিষ্ময়ে শুনছিলেন শরৎচন্দ্র। তাঁর এতদিনের লালিত চিন্তার স্রোত যেন থমকে দাঁড়াল। কাতরকন্ঠে বললেন শরৎচন্দ্র "এমন করে কখনও তো ভাবিনি ঠাকুর, - এতদিন ভাবনার ধারাটাই ছিল উল্টো রকমের। সমস্যাটা তুলে ধরেছি, ভেবেছি সমাজ সংস্কারক করবে তার সমাধান। এখন কি আর শেষ সময়ে অন্য ভাবের রচনা সৃষ্টি করতে পারব?" ব্যথাহীন কন্ঠে কথাগুলো বলে ঠাকুরের জ্যোতির্ময় মুখের দিকে তাকালেন শরৎচন্দ্র।
ঠাকুর ভরসাদীপ্ত কন্ঠে বললেন - অবশ্যই পারবেন। এখনই লেগে পড়েন। অনুশোচনার সুরে শরৎচন্দ্র খুব আফসোস করে বললেন - "ঠাকুর আমার জীবনের প্রথম উপন্যাস লেখার আগে কেন আপনার কাছে এলাম না"

সম্পাদনায়: রিন্টু কুমার চৌধুরী
পরিচালক, শ্রেয় অন্বেষা
(শ্রীশ্রীঠাকুর’র আদর্শ ও কর্ম ভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্টান )
No comments:
Post a Comment