মহাত্মাজীর গলা জড়িয়ে ধরে মাতা মনোমোহিনী দেবী বললেন - "তুমি জগতের কাছে মহাত্মা হতে পার, আমার কাছে তুমি ছেলে, আমি ছেলে হিসাবেই তোমাকে দেখি"।
সুশীলদা মহাত্মাজীকে মায়ের কথা বুঝিয়ে বললেন তিনি খুশী হয়ে খুব হাসলেন। মা নিজ হাতে মহাত্মাজীর জন্য ফলমূলাদি ও অন্যান্য খাবার দিয়ে দিলেন। স্বশ্রদ্ধায় ও সানন্দে মহাত্মাজী তা গ্রহণ করে সঙ্গে নিলেন।
মহাত্মাজী জননী মনোমোহিনী দেবীর স্নেহল মাতৃত্ব এবং মহীয়সী ব্যক্তিত্বে খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন। ভারতের বিভিন্ন স্থানে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঠাকুর ও সৎসঙ্গ বিষয়ে আলোচনাকালে তিনি মায়ের খুব প্রশংসা করেন। মা সম্পর্কে তাঁর অবিষ্মরনীয় উক্তি - 'I have never seen such a masterful woman of such wonderful personality in my life' (এমন বিষ্ময়কর ব্যক্তিত্ব-সম্পন্না মহীয়সী নারী জীবনে আমি কখনও দেখি নাই।)

ঠাকুর একথা শুনে বললেন - "প্রশংসার কথাতো জানিনা। তবে নিন্দা যদি কিছু শুনে থাকেন তবে ভরসা হয় পরমপিতার কাজ তাহলে একটু আধটু শুরু হয়েছে"। ঠাকুরের কথায় মহাত্মাজী মুগ্ধ হয়ে হাসতে লাগলেন। শেষে বললেন “আপনার সংস্পর্শে এসে দেশবন্ধুর যে অদ্ভুত মানসিক পরিবর্ত্তন সাধিত হয়েছে তা দার্জিলিং এ তাঁর সাথে আলাপ করে বুঝতে পেরেছি”।
ঠাকুরকে ধরে দেশবন্ধুর রাজনৈতিক সত্ত্বা যেভাবে আধ্যাত্মিক দিকে বাঁক নিয়েছিল দেশবন্ধুর সেই বিষ্ময়কর নবজীবনের কথা মহাত্মাজী বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন।২৮/৬/১৯২৫'নবজীবন' পত্রিকায় বলেন “দার্জিলিং-এ তাঁর কাছে যখন যাই, তখন তিনি বাড়ীতে মাছ-মাংস ঢুকতে দিতেন না। তিনি আমাকে বার-কয়েকই বলেছিলেন,-'পারলে আর কখনও মাছ-মাংস খাবনা, আমার খেতে ভাল লাগে না, আর তাতে আধ্যাত্মিক বিকাশেও বাধা ঘটে। আমার গুরুদেব বিশেষভাবে বলেছেন - আমি এখন যে সাধনার পথ ধরেছি তাতে আমার পক্ষে আমিষ বর্জন করাই বিধেয়।'
লেখক: রিন্টু কুমার চৌধুরী
পরিচালক, শ্রেয় অন্বেষা
(শ্রীশ্রীঠাকুরের আদর্শবিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিষ্টান)

No comments:
Post a Comment